(ফেসবুক থেকে)
আর্য-অনার্য প্রসঙ্গে টানলে আজাইরা কিছু ক্যাচালের সুযোগ দেয়া হয়। তাই এই পোস্টে সেইদিকে যাইতে চাইতেছি না। তবে দেবদেবীদের মধ্যে ধলা আর কালা–এই দুইটা শ্রেণীবিভাগ তো মানবেন। যেমন ধরেন দুর্গা ধলা, আর কালী কালা। এই দুইটা শ্রেণীর মধ্যে একটা দ্বন্দ্বও সিক্রেট কিছু না।
তো হিন্দুদের একটা ‘ধর্মীয় সত্য’ (কালিকাপুরাণ মতে) হলো–শিবের সাথে হানিমুনে গিয়া নদীতে ডুব দিয়া কালা কালী ফর্সা দুর্গা হইয়া যায়। ফেয়ার এন্ড লাভলির যুগে এই জিনিসটা কেউ মানতে চাইবে বইলা মনে হয় না। তাইলে আসল ঘটনা কী?
কালী নদীতে নাইতে নামলে ধলা পক্ষের লোকজন কালীরে টাইনা মাঝনদীতে নিয়া চুবাইয়া মাইরা ফেলায়, আর কালী যেখানে ডুব দিছিল, কাছাকাছি কোনো আড়াল থিকা ডুব সাঁতার দিয়া দুর্গা আইসা সেখানে হাজির হয়। [এই পদ্ধতিতে কাউরে নাই কইরা দেয়ার ঘটনা ইতিহাসে প্রচুর পাবেন। এমনকি গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুরেও এমনে সরাইয়া দেয়া হইছে বইলা সন্দেহ করেন অনেকে।] পরে এই দুর্গারে দিয়াই ধলা দেবদেবীরা স্থানীয় গোত্রগুলারে ধ্বংস করে বা তাদের লাইনে আনে।
যা হোক, শোনা যায় ভারতবর্ষের চোর-ডাকাতরা নাকি কালীর পূজা না দিয়া চুরি-ডাকাতি করতে বের হইত না। মানে কালীর কাছে মানত করত–চুরি-ডাকাতি কইরা যা পাব, তার থিকা কিছু ভাগ তোমার নামে উৎসর্গ করব। ভাবছি–মরু-ডাকাতরাও কি তাই করত? ৩৬০টা মূর্তির সবগুলার নাম এবং কে কোন দেব-দেবতা–সেসব ইতিহাস হয়তো খুঁজলে পাওয়া যাবে, বা এমনভাবে সেসব ইতিহাস ধ্বংস করা হয়েছে যে হয়তো আর পাওয়া যাবে না। কিন্তু পৃথিবীতে যতদিন মুসলমান থাকবে, ততদিন ইসলামপূর্ব আরবদের প্রধানদেবতা–হুবাল, অর্থাৎ চন্দ্রদেবতা, অর্থাৎ আল্লার নামও থাকবে। সেই সাথে আল্লার তিন কন্যা–তিন প্রধান দেবীর নাম এবং মূর্তির ছবি এখনো পাওয়া যায়–আল-লাত, আল-উজ্জা, মানাত।
আল-উজ্জাকে ভারতের দুর্গার সাথে তুলনা করা হয়। আর অনেকে মানাতকে তুলনা করেন লক্ষ্মীর সাথে। আমার আল-লাতের হাতে ফসল দেখে আমার মনে হয় লক্ষ্মীর সাথে এর তুলনাটাই বেশি মানানসই হইত।
আর বাংলায় মানত ব্যাপারটা কি এই মানাত দেবীর সাথে সম্পর্কযুক্ত? আরবেরা এই দেবীর কাছেই কোনো কিছুর জন্য ‘মানত’ করত বলে শোনা যায়। এর কালো পোশাক, সাজসজ্জা, ভয়ংকর চাহনি–কিছুটা কালীর সাথেই তুলনীয়।
আপনারা জানেন আমাদের মহানবি চুরিডাকাতি কইরা আনা মালামালের পাঁচভাগের একভাগ আল্লার নামে উৎসর্গ করতেন। আমার মনে হয় সেটা এই মানাত দেবীকেই স্মরণ করেই করতেন। আর এনার স্মরণেই বাকিরাও এই ব্যবস্থাটা মেনে নিয়েছিলেন। বহুঈশ্বরবাদ থেকে একেশ্বরবাদে উত্তরণটা এক প্রজন্মেই ঘটা সম্ভব বলে মনে হয় না। ভুলে যাবেন না, এখনো অনেক মুসলমানের মনে বনবিবি ফতেমাবিবি ওলাবিবির নাম জীবন্ত। এমনকি অনেক মুসলমান গোপনে এখনো কালীপূজা করেন… ধরা খেলে তখন নিউজও হয় সেসব নিয়ে।
[কারো ধর্মানুভূতিতে আঘাত দেয়ার জন্য এই কথাগুলো বললাম না। জাস্ট মনে হলো–তাই বলা। আপনারাও চিন্তা করে দেখতে পারেন। নিশ্চয়ই আল্লা চিন্তাশীলদের পছন্দ করেন।]
Leave a Reply