লিখেছেন : কবিতা রায়
কচুবনে ভেরেন্ডা মাত্রেই বৃক্ষ হয়।
হজরত শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংস ঠাকুর একবার শখ করে মুসলমান হয়েছিলেন। সুফি গোবিন্দ রায় ওরফে ওয়াজেদ আলি খান সাহেবের কাছে সাতদিন ইসলামের গল্প শুনেই উনি ভাবলেন একবার দেখাই যাক। যত মত তত পথ। অতএব আল্লার নাম নিয়ে মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়তে লাগলেন। মাত্র তিনদিন সাধনা করেই তাঁর সিদ্ধিলাভ হয়ে গেল। তিনি আল্লার নূর লাভ করলেন।
হজরত অনুকূল চক্রবর্তী আবার আরো একধাপ উপরের অবতার। তিনিই নাকি আগের জন্মে যীশু আর মহম্মদ ছিলেন। এ ব্যাপারে ওনার পরম ভক্ত রেবতীমোহন বিশ্বাস আমেরিকা গিয়ে গবেষণায় প্রমাণ করেছেন যে শ্রী অনুকূল ঠাকুর এবং ক্রাইস্ট অভিন্ন। তাঁর এই থিসিস অনলাইনেও পাওয়া যায়, এটির জোরে তিনি ডক্টরেট ডিগ্রীও পেয়েছিলেন।
বড়ই দুঃখের কথা যে এইসব জীবন্ত যীশু আর মহম্মদ এতকাল ঘুরে বেড়ালেও মক্কার ইমাম কি ভ্যাটিকানের পোপ একবার এসে ওনাদের চরণে ধরলনা। এইসব অলৌকিক শক্তিধর অবতারেরা চাইলেই মনেমনে মক্কার ইমাম বা ভ্যাটিকানের পোপকে মেসেজ দিতে পারতেন। তার বদলে ডক্টর রেবতীমোহন বিশ্বাস কি নরেন্দ্রনাথ দত্তকে জাহাজ ধরে আমেরিকায় গিয়ে মাসের পর মাস লেকচার দিতে হল। তারপরেও কাজের কাজ কিছু যে হয়েছে এমন নয়। ভ্যাটিকান কি মক্কায় এইসব অলৌকিক অবতারদের একটা ক্যাম্প তৈরি হতে এখনো অনেক সময় লাগবে। তার চেয়ে বহু কম সময়ে মানুষ মঙ্গলগ্রহ জয় করে ফেলতে পারে।
এদের গল্পগুলো ক্রীশ্চান বা মুসলিমরা যেমন হাস্যকর মনে করে, এদের ভক্তরাও তাই। রামকৃষ্ণের কথামতো ওনার পূনর্জন্ম হয়ে গেছে, মিশনের পক্ষ থেকে ওনাকে খুঁজে এনে চরণসেবা করবার কোনো উদ্যোগই নেওয়া হয়নি। অনুকূলচন্দ্রের ভক্তরাও গুরুর কথায় চাঁদে সুপারিগাছ খুঁজতে যায়না। ঠিক যেমন যীশু-মহম্মদের পূনর্জন্মকে মুসলিম বা ক্রিশ্চানেরা পাত্তাই দেয়নি, তেমনই রামকৃষ্ণের পুনর্জন্মকে মিশনের সাধুরা কোনো গুরুত্বই দেয়না।
Leave a Reply