পহেলা বৈশাখ এবং মঙ্গল শোভাযাত্রার বিরুদ্ধে মুসলমানরা বর্তমানে কামান দাগাচ্ছে। কারণ এগুলো হিন্দুয়ানী সংস্কৃতি। এভাবে সংস্কৃতিরে আলাদা করার কারণ হলো–মুসলমানরা এই বাংলাদেশের সর্বস্তরে আরবধর্মের পাশাপাশি আরব সংস্কৃতি চালু করতে চায়। অর্থাৎ বিষয়টা এখন হিন্দুয়ানী সংস্কৃতি বনাম আরব বা ইসলামি সংস্কৃতি।
উইকিতে সংস্কৃতির সংজ্ঞা পাইলাম–‘সমাজের সদস্য হিসেবে অর্জিত নানা আচরণ, যোগ্যতা এবং জ্ঞান, বিশ্বাস, শিল্পকলা, নীতি, আদর্শ, আইন, প্রথা ইত্যাদির এক যৌগিক সমন্বয় হল সংস্কৃতি।’
ভাষা, খাদ্য–এগুলাও সংস্কৃতির অংশ।
তো পহেলা বৈশাখ এবং মঙ্গল শোভাযাত্রার পাশাপাশি বাংলাদেশে আর কী কী ‘হিন্দুয়ানী সংস্কৃতি’ আছে? হিন্দুরা বাংলা ভাষায় কথায় বলে, হিন্দুরা ভাত-মাছ খায়…এভাবে এই দেশের হিন্দু সমাজ যা যা করে, তা সবই হিন্দুয়ানী সংস্কৃতির অংশ। মুসলমানরা দিন দিন হিন্দুরা যা যা করে তা সবই বর্জন করবে। যেমন, হিন্দুরা হাগু করে পানি ব্যবহার করে, মুসলমানরা ঢিলা কুলুখ ব্যবহার করবে, ইত্যাদি ইত্যাদি।
ভাষার ব্যবহার, নামকরণের বেলায় মুসলমানরা অনেকখানি আরব হয়ে গেছে। যেমন যেখানে কৃষ্ণ ছিল, সেখানে মোহাম্মদ… বাংলাদেশটাও হিন্দুয়ানী নাম। অনেকেই বাংলাদেশের জায়গায় নতুন নতুন নাম প্রস্তাব দিয়েছেন। আজ দেখা যাক বাংলাদেশের ঋতু মাস আর সপ্তাহের নামগুলোকে কিভাবে মুসলমানি দেয়া যায়।
প্রথমে মাসের ব্যাপারে আসি–বাংলা ১২টা মাসের নাম পরিবর্তন করে নবীর ১২টা বিবির নামে করা যায়–খাদিজা, সাওদা, আয়িশা, হাফসা, জয়নব, সালামা, জয়নব, জুওয়াইরিয়া, রামালাহ, রায়হানা, সাফিয়া এবং মাইমুনা। মাসের বৈচিত্রের সাথে বিবিদের চরিত্র মিলিয়ে কার নামে কোন মাসের নাম রাখা যায়, সেটা নিয়ে ভাবতে হবে। অবশ্য দুইটা নাম বাকি থাকে–দাসী মারিয়া, পিরীতের উম্মে হানি। দুইটা বিবিরে বাদ দিয়ে এদের দুজনরেও ঢুকানো যায় কি না দেখতে পারেন।
সপ্তাহের সাতদিনের নামের প্রস্তাব– বকরবার, ওমরবার, ওসমানবার, আলিবার, হাসানবার, হোসেনবার–চার খলিফা আর হাসান-হোসেনের জন্য দুইদিন–ছয়দিন হয়ে গেলো। আর পবিত্র জুম্মাবারের নাম অবশ্যই ‘মোহাম্মদবার’ রাখা উচিত।
ষড়ঋতুর বেলায়– গরমের হিসাবে আরবকাল হতে পারে গ্রীষ্মকালের বিকল্প। মক্কার বিখ্যাত বন্যার স্মরণে বর্ষাকালের নাম হতে পারে মক্কাকাল। শীতকালে ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত। নবীর হিজরতের স্মরণে শীতকালের নাম হতে পারে মদিনাকাল। আরববসন্তের সূচণা হয়েছিল মিশরে। তাই বসন্তকালের নাম হোক মিশরকাল। ইসলাম কায়েম আর জঙ্গি উৎপাদনে সিলেট আর চিটাগাঙের ভূমিকা অপরিসীম। শরতকাল আর হেমন্তকালের জন্য ওই দুইটা নামের চেয়ে ভালো অপশন এখনো পাচ্ছি না।
[অফটপিক : হিন্দুয়ানী পর্ন বলে এখনো কিছু শোনা যায় নাই। তবে কামসূত্রের সূত্রগুলা অচিরেই বাতিল হয়ে নবীসূত্র, অর্থাৎ ‘যেমনে ইচ্ছা তেমনে গমন’সূত্র চালু হতে পারে। আর ইয়ে মানে বিদেশি পর্ন মানেও তো ‘ভিনদেশীসংস্কৃতি’। বাংলাদেশের মুসলমানরা কবে নাগাদ ‘নবীপর্ন’ খোঁজা শুরু করবে বলে মনে করেন?]
বাংলাদেশে একটা ছাগলের নাম আছে রাম ছাগল। রাম হিন্দুদের ভগবানের নাম। এটার কি নাম পরিবর্তন করা যায় না?