• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

পাল্লাহু । pAllahu

দাঁড়িপাল্লা ধমাধম-এর বাংলা ব্লগ

  • পাল্লাব্লগ
  • চুতরাপাতা
  • মহাউন্মাদ
  • ধর্মকারী
  • রেফারেন্স
  • ট্যাগস

উর্বশী উর্বশী টেক ইট ইজি উর্বশী

You are here: Home / পাল্লাব্লগ / উর্বশী উর্বশী টেক ইট ইজি উর্বশী
December 1, 2015

১) কালী-গৌরী–নাম হিসাবে ব্যবহৃত হলেও শব্দগুলো বিশেষ্যবাচক নয়। বিশেষণ। গায়ের রঙ কালো, তাই কালী; গায়ের রঙ ফর্সা/গৌর, তাই গৌরী। এভাবেই পয়েণ্ট আউট করা। পদাবলী-কীর্তনে রাধাকেও তার ফর্সা গায়ের রঙের জন্য অনেক বার গৌরী বলা হয়েছে। আর কৃষ্ণতো কালাই। এইটারে কি বর্ণবাদী আচরণ বলা যায়? মনে হয় না। “নির্দিষ্ট কিছু বৈশিষ্ট্যের জন্য উঁচু অথবা নিচু; কিংবা তার উপর কর্তৃত্ব করার অধিকারী; অথবা বেশি যোগ্য কিংবা অযোগ্য”–এইরূপ পার্থক্য না করলে মনে হয় সেটা বর্ণবাদিতার অপরাধের পর্যায়ে পড়ে না। “কৃষ্ণ কালো”–এই কথায় যদি অবজ্ঞা না থাকে, তাহলে বর্ণবাদের পর্যায়ে পড়বে না। ফর্সা হওয়া যদি অপরাধ না হয় তাহলে কালো হওয়াও অপরাধ না। তেমনি মেয়ে মানুষ/ছেলে মানুষ–এই টার্ম দিয়ে যদি ভেদাভেদ না বুঝায়, তাহলে বাকিটা শুধু পরিচয় বুঝায়। কোনো মেয়েকে কেউ মেয়ে বললে তাতে মেয়েটির লজ্জার কিছু নেই, কারণ এটাই সত্য, এবং একটা পরিচয়। (অনেকরেই দেখি ভাব নিয়ে বলতে–‘মেয়ে নয়, মানুষ হন!’ আরে একটা মেয়ে তো মেয়ে এবং মানুষ–দুইটাই। আলাদা করে আবার মানুষ হওয়ার কী আছে!)

২) গায়ের কালো রঙ নিয়ে আমাদের সমাজে একটা নাক ছিটকানো ভাব আছে। অথচ আমরা যতই ফর্সা হই না কেন, পশ্চিমা ফর্সাদের চোখে আমরা কালোই। ইদানিং তারা আফ্রিকান কালোদের সাথে পার্থক্য করতে আমাদেরকে “ব্রাউন” বলে। তো ঐ যে আমাদের কালো রঙ নিয়ে হীনমন্যতায় ভুগি, আর এটার সুযোগ নিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছে “ফেয়ার এণ্ড লাভলি” টাইপের কোম্পানিগুলো। কিন্তু কথা হলো, রঙ ফর্সাকারী ক্রিম ব্যবহার করে যদি আসলেই ফর্সা হওয়া যেত, তাহলে উন্নতদেশের টাকাওয়ালা কালো মানুষগুলো এতদিন আর কালো থাকত না।  আরেকটা ব্যাপার দেখুন, এই কোম্পানিগুলো ওসব দেশে গিয়ে ব্যবসা করতে পারছে না, কারণ ওরা জানে গায়ের রঙ বড় ব্যাপার নয়, বা এটা পরিবর্তন করাও সম্ভব নয়। মাইকেল জ্যাকসন মাথা খারাপ করে কত চেষ্টাই না করল সাদা হতে। শেষ পর্যন্ত কী হলো!

কালো থেকে ফর্সা হওয়ার এই বেকুবী চিন্তা ভারতীয়দের মাথায় কেন কবে কোথায় কিভাবে এলো? পৌরাণিক কাহিনীতে দেখি বিষ্ণু কালো, রাম কালো, কৃষ্ণ কালো, শিবও কালো। কিন্তু এরা কেউ কোনোদিন ফর্সা হওয়ার চেষ্টা করে নাই। বা এই চিন্তাও তাদের মাথায় আসে নাই। এসেছিল কালীর মাথায়।

ছেলেরা বিপথে-কুপথে গিয়ে নেশা-ভাঙ-গাঁজা ধরলে আমাদের সমাজ বলে,’ বিয়া দিয়া দেও, ঠিক হয়ে যাবে।’ শিবকেও ঠিক করতে ব্রহ্মা আর বিষ্ণু মিলে তারে সতীর সাথে বিয়েতে রাজি করাল। বিয়ের কিছুদিন পর সতী আত্মহত্যা করে মারা গেলে শিব আবার সেই আগের ছন্নছাড়া জীবনে ফিরে গেল। ব্রহ্মা-বিষ্ণু আবার শিবকে রাজি করাল বিয়ে করতে। কিন্তু সতীর মত ফর্সা সুন্দরী মেয়ে তো পাওয়া সহজ নয়। তখন নেশাখোর শিবকে বুঝানো হল যে সতী আবার কালীরূপে পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করছে। শিব রাজি হলো। কালীর সাথে বিয়ে হলো। কিন্তু বিয়ের পরে নেশার ঘোর কেটে গেলে দেখা গেলো বউয়ের চেহারা ভালো হলেও দেখতে কালো। কিন্তু বিয়ে যখন একবার হয়ে গেছে তখন কী আর করার!

শিব কালীকে নিয়ে হানিমুনে ঘুরে বেড়াতে লাগত। ঘুরতে ঘুরতে স্বর্গের অপ্সরাদের সাথে দেখা হয়ে গেলো। কে না জানে অপ্সরারা দেবীদের চেয়েও সুন্দরী এবং ফর্সা! “তাহারা রূপযৌবনশালিনী সমস্ত সুলক্ষণযুক্তা; তাহাদের মধ্যে ঊর্বশী নামে বেশ্যা অত্যন্ত মনোহরা।” অপ্সরারা কালীকে দেখে ভয় পেয়ে গেল। তখন শিব কালীকে “শ্যামলী” বলে সম্মোধন করে বলে তোমার গায়ের রঙ দেখে ওরা ভয় পাচ্ছে, তুমি ওদের সাথে ভালোভাবে কথা বলো, না হলে আরো ভয় পাবে।

অপ্সরারা চলে গেলে কালী তো রেগে অগ্নিমূর্তি ধারণ করল। অপ্সরাদের সামনে শিব কেন তার গায়ের রঙ নিয়ে খোটা দিল, পরিহাস করল, অপমান করল! কালী গো ধরল, যতদিন না তার গায়ের রঙ ফর্সা হচ্ছে, ততদিন আর শিবের সাথে “সম্ভোগাদি” করবে না। শিব ভাবল–এতো মহা জ্বালা! এতদিন পরে নতুন বিয়া করলাম, আর বউ কিনা বলে…

যা হোক, পরে শিব কালীকে আকাশগঙ্গার জলে স্নান করাইলে কালীর গায়ের রঙ ঊর্বশীর মত ফর্সা হয়ে যায়। কালিকাপুরাণে এসব কথাই বলা আছে।

৩) পুনশ্চঃ যেহেতু তখনকার যুগে ফেয়ার এণ্ড লাভলি ছিল না, তাই এই গায়ের রঙ ফর্সা করার কাহিনীটা ভূয়া হওয়ার সম্ভাবনাই বেশী। তাহলে সেদিন আসলে কী ঘটেছিল? জন্মগতভাবে কালো হওয়ার পরেও যারা ফেয়ার এণ্ড লাভলি মেখে ফর্সা হতে চায় তাদের বুদ্ধিসুদ্ধি কেমন হতে পারে, বুঝেনই তো। কেন জানি মনে হয়, শিবের আসলে বউ পছন্দ হয় নাই। ওদিকে ঊর্বশীদের দেখে তার মাথা আরো ঘুরে গেছিল। আর ওদিকে কালী ফর্সা হওয়ার বায়না ধরলে শিব দুয়ে দুয়ে দুষ্ট বুদ্ধি বের করে ফেলল। কালীকে বলল যে গঙ্গায় নিয়ে মন্ত্র পড়ে কয়েকটা চুবুনি দিলেই কালো রঙ ফর্সা হয়ে যাবে। কালী রাজি হলে শিব ওরে গঙ্গায় চুবিয়ে মেরেই ফেলল। তারপর হয়তো ওই ঊর্বশী বা ওদের মধ্যেই কাউরে বিয়ে করে পরে তাকে গৌরী/পার্বতী/দুর্গা সাজিয়েছে। কালিকা পুরাণে শিব নিজে দুর্গা পূজায় বেশ্যাবাড়ির মাটি লাগবে বলে বলছে। আর ওই ঘটনার সাথে দুর্গাপূজায় বেশ্যাবাড়ির মাটি লাগার একটা সম্পর্ক থাকলেও থাকতে পারে।

Category: পাল্লাব্লগTag: পুরাণ, হিন্দুধর্ম
Previous Post:কোরান কুইজ – ৮৪
Next Post:বেদ্বীনবাণী – ৫৫

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পাল্লাহু । pAllahu • ফেসবুক • পেজ • টুইটার

Return to top